বাড়িতে শুয়ে বসে তোলেন বেতনের টাকা রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা
বাড়িতে শুয়ে বসে তোলেন বেতনের টাকা। যদিও খাতা কলমে রেলের নিরাপত্তা দিচ্ছেন তারা। রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর ঢাকা বিভাগে ঘটছে এমন তুঘলকি কাণ্ড। অভিযোগ রয়েছে, বড় বাবুদের ম্যানেজ করে সারাদেশে এভাবেই বেতন তুলছেন তিন শতাধিক আরএনবি সদস্য। যদিও এ বিষয়ে সময় টিভির ক্যামেরার সামনে সংশ্লিষ্টদের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের নান্নু মিয়া রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনী আরএনবির অস্ত্র শাখার একজন সিপাহী। ২২ ফেব্রুয়ারি নান্নু মিয়ার বাড়িতে যায় সময় সংবাদ। ওইদিন তার ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে দায়িত্ব পালনের কথা। কিন্ত তাকে পাওয়া যায় তার গ্রামের বাড়িতেই।
বছর ধরে তিনি বাড়িতেই থাকেন নান্নু মিয়া, কিন্ত খাতা কলমে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকাতে। নিয়মিত বেতনও তোলেন। তিনি জানান, ইনচার্জকে ম্যানেজ করে ভগবান ছুটিতে আছেন তিনি। ঢাকায় তার বদলে দায়িত্ব পালন করেন ছেলে নাজিম উদ্দীন।
নান্নু মিয়া জানান, আমার ডিউটি আমার ছেলে করে, তারটাও করে, আমারটাও করে।
গাজীপুরের কাপাশিয়ার মোবারক হোসেন তিনিও অস্ত্র শাখার সিপাহি। তথ্য বলছে, বছরে ছয় মাসই বাসায় থাকেন তিনি। এমন তথ্যের সত্যতা জানতে গাজীপুরে তার বাসায় গেলে সময় সংবাদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান মোবারক।
ফোনে যোগাযোগ করা হলে বাড়িতে থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি।
প্রতিবেশীরা বলছেন, গত কয়েক মাস ধরে মোবারককে বাড়িতেই দেখেছেন তারা।
প্রতিমাসে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে সিপাহি ও হাবিলদারদের এ অনিয়মের ব্যবস্থা করে দেন ইনচার্জরা। শুধু কমলাপুরেই আছেন এমন অন্তত ৪০ জন। এ ব্যাপারে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি কমলাপুর অস্ত্র শাখার ইনচার্জ জিহাদুল ইসলাম।
জিহাদুল ইসলাম বলেন, আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই না, আমাকে মাফ করেন।
এসব অনিয়মের ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন ঢাকা কমান্ড্যান্ট।
ঢাকা বিভাগ রেলওেয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট মিজানুর রহমান বলেন, তার বিরুদ্ধে চার্জশিট হওয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সারাদেশে দুই হাজার ৭০০ আরএনবি সদস্যের মধ্যে বছর ধরে এমন ডিউটিতে থাকেন অন্তত ৩০০ জন। নিজেরাই যার নাম দিয়েছেন ভগবান ডিউটি।